সকালে কোনরকমে নাকেমুখে কিছু গুজে দিয়েই বেরিয়ে পড়া রোজকার রোজগারের অভিযানে । গ্রীষ্মের দারুন রোদ্দুরে ছারখার হয়ে যাওয়া জীবনে বাস স্ট্যান্ডএ একটু ছোট শেড । You know it feels like heaven। চারপাশে চাপা টেনসন ।বাস এলেই হালকা গুতোগুতি করে চটুল পায়ে বাস এর দরজার সামনে এসে দাড়ানো । তারপর নামতে থাকা যাত্রীদের উপেক্ষা করে উঠে যাওয়া বাসএ । এক ঝলকে মেপে নেওয়া সব যাত্রীদের । কে নামতে পারে আগে ? ছোট্ট হিসাব কষা মনে মনে । তারপর কোনো এক সিট এর সামনে দাড়িয়ে পরা ।
"দাদা, কোথায় যাবেন ?"
"ব্যাগ তা একটু ধরুন না । ধন্যবাদ ।"
অবশ্য সবাই আজকাল thanks বলে । ইংরেজি বলাটাই এখনকার দস্তুর । বাঙালি ধীরে ধীরে বাংলা ভুলছে । অর্ধেক হয়ে গেছে হিন্দী আর অর্ধেক ইংরেজি । ভাবতে খুব অবাক লাগে একসময় এই জাতিটাই নিজের ভাষার জন্যে লড়াই করেছিল !
গরমটাও পড়েছে বেশ এবার । পাশের লোকের ঘামের সঙ্গে নিজের ঘাম মাখামাখি হয়ে একাকার । কারো আবার একটু বেশি ঘাম । টপ টপ করে জলের ফোটার মত পড়ছে বসে থাকা লোকেদের উপরে । যারা জানালার ধরে তারা সবার হিংসের বস্তু । বেশ ফুরফুরে হাওয়া, বুকটা জুড়িয়ে দেয় । কন্ডাক্টর এর ক্রমাগত "পিছনে যান " উপেক্ষা করে দাড়িয়ে থাকি ঠায় । হাত দুটো জাম করে দিই হ্যান্ডেলে । কাধ দুটো রেগুলার ধাক্কার চোটে শক্ত হয় । পা দুটো থামের মত গেঁথে যায় বাসের ফ্লোরে । জানলার হাওয়ার একটা ছোট অংশ পাই আমিও । পিঠটা যদিও ঘেমে ভিজে যায় ।
এবার শুধু অপেক্ষার পালা । কখন সামনের বসে থাকা লোকগুলো উঠবে আর তুমি ন্যাচারাল প্রগ্রেসনে গিয়ে বসবে জানলার ধারে । আমার মত দূরের যাত্রীদের এই ন্যাচারাল প্রগ্রেসনের প্রচুর সুযোগ থাকে । আবার কখনো ভুল সিটের সামনে দাড়িয়ে পরে কেলেঙ্কারী । আসে পাসে সব সিট খালি হয়ে যায় । আমার সামনে দুটি লোক স্থানুর মত বসে আছে । এদের ও গন্তব্য আমার মত দুরে । বিরক্তিকর ।
রুমাল দিয়ে ঘাম মুছি আর রোজকার এই একঘেয়ে স্ট্রাগল এ সামিল হয়ে যাই । জানলার বাইরে খোলা হাওয়া, বিস্তীর্ণ আকাশ, মুক্ত জীবন । জানলার ভিতরে ইঁদুর দৌড় । মনে মনে হাসি । কোন পাগলে ভেবেছিল যে সব মানুষ একদিন ইঁদুর হয়ে যাবে ! মাথার ভিতর একের পর এক গভীর চিন্তা জাগে । নিজেকে হঠাত বিশাল দার্শনিক মনে হয় । মনে হয় চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাই বহুদূরে । মুক্ত জীবনের খোঁজে । পকেটের কাছে হাতের খোঁচা লাগে । মুহুর্তে সজাগ হয়ে যায় সব কত ইন্দ্রিয় ।
এই লাইন এ পকেটমারের অভাব নেই । পকেটে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ । সাবধান । তারপর দেখি আমারি মত নিরীহ, গোবেচারা আর এক ইঁদুর । মুচকি হেসে আবার চিন্তা চালু হয়ে যায় দার্শনিকের ।
সামনের সিট খালি হয় । ন্যাচারাল প্রগ্রেসনে আমি চলে যাই কাঙ্খিত জানলার ধারে । মুহুর্তে সংসার সুখের হয়ে যায় । অফিস মনে হয় ভালই তো । বাড়ি ফিরে কি করব সন্ধ্যা তা তার ফিরিস্তি দিই মনে মনে । জানলার বাইরে মুক্ত জীবনের খুব কাছে আমি তখন । তাই ভিতরের টানটাও প্রবলতর । ভিতরের টানে হারিয়ে যাই আমি । জানলার বাইরে তখন নীল আকাশ, প্রচন্ড রোদ্দুর । জানলার বাইরে তখন তারুণ্য আর মুক্ত জীবন । আমার চোখ তখনও জানলার বাইরে ।কিন্তু এখন তো আমি ইঁদুর দৌড়ে জয়ী ।
"দাদা, কোথায় যাবেন ?"
"ব্যাগ তা একটু ধরুন না । ধন্যবাদ ।"
অবশ্য সবাই আজকাল thanks বলে । ইংরেজি বলাটাই এখনকার দস্তুর । বাঙালি ধীরে ধীরে বাংলা ভুলছে । অর্ধেক হয়ে গেছে হিন্দী আর অর্ধেক ইংরেজি । ভাবতে খুব অবাক লাগে একসময় এই জাতিটাই নিজের ভাষার জন্যে লড়াই করেছিল !
গরমটাও পড়েছে বেশ এবার । পাশের লোকের ঘামের সঙ্গে নিজের ঘাম মাখামাখি হয়ে একাকার । কারো আবার একটু বেশি ঘাম । টপ টপ করে জলের ফোটার মত পড়ছে বসে থাকা লোকেদের উপরে । যারা জানালার ধরে তারা সবার হিংসের বস্তু । বেশ ফুরফুরে হাওয়া, বুকটা জুড়িয়ে দেয় । কন্ডাক্টর এর ক্রমাগত "পিছনে যান " উপেক্ষা করে দাড়িয়ে থাকি ঠায় । হাত দুটো জাম করে দিই হ্যান্ডেলে । কাধ দুটো রেগুলার ধাক্কার চোটে শক্ত হয় । পা দুটো থামের মত গেঁথে যায় বাসের ফ্লোরে । জানলার হাওয়ার একটা ছোট অংশ পাই আমিও । পিঠটা যদিও ঘেমে ভিজে যায় ।
এবার শুধু অপেক্ষার পালা । কখন সামনের বসে থাকা লোকগুলো উঠবে আর তুমি ন্যাচারাল প্রগ্রেসনে গিয়ে বসবে জানলার ধারে । আমার মত দূরের যাত্রীদের এই ন্যাচারাল প্রগ্রেসনের প্রচুর সুযোগ থাকে । আবার কখনো ভুল সিটের সামনে দাড়িয়ে পরে কেলেঙ্কারী । আসে পাসে সব সিট খালি হয়ে যায় । আমার সামনে দুটি লোক স্থানুর মত বসে আছে । এদের ও গন্তব্য আমার মত দুরে । বিরক্তিকর ।
রুমাল দিয়ে ঘাম মুছি আর রোজকার এই একঘেয়ে স্ট্রাগল এ সামিল হয়ে যাই । জানলার বাইরে খোলা হাওয়া, বিস্তীর্ণ আকাশ, মুক্ত জীবন । জানলার ভিতরে ইঁদুর দৌড় । মনে মনে হাসি । কোন পাগলে ভেবেছিল যে সব মানুষ একদিন ইঁদুর হয়ে যাবে ! মাথার ভিতর একের পর এক গভীর চিন্তা জাগে । নিজেকে হঠাত বিশাল দার্শনিক মনে হয় । মনে হয় চাকরি ছেড়ে দিয়ে চলে যাই বহুদূরে । মুক্ত জীবনের খোঁজে । পকেটের কাছে হাতের খোঁচা লাগে । মুহুর্তে সজাগ হয়ে যায় সব কত ইন্দ্রিয় ।
এই লাইন এ পকেটমারের অভাব নেই । পকেটে মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ । সাবধান । তারপর দেখি আমারি মত নিরীহ, গোবেচারা আর এক ইঁদুর । মুচকি হেসে আবার চিন্তা চালু হয়ে যায় দার্শনিকের ।
সামনের সিট খালি হয় । ন্যাচারাল প্রগ্রেসনে আমি চলে যাই কাঙ্খিত জানলার ধারে । মুহুর্তে সংসার সুখের হয়ে যায় । অফিস মনে হয় ভালই তো । বাড়ি ফিরে কি করব সন্ধ্যা তা তার ফিরিস্তি দিই মনে মনে । জানলার বাইরে মুক্ত জীবনের খুব কাছে আমি তখন । তাই ভিতরের টানটাও প্রবলতর । ভিতরের টানে হারিয়ে যাই আমি । জানলার বাইরে তখন নীল আকাশ, প্রচন্ড রোদ্দুর । জানলার বাইরে তখন তারুণ্য আর মুক্ত জীবন । আমার চোখ তখনও জানলার বাইরে ।কিন্তু এখন তো আমি ইঁদুর দৌড়ে জয়ী ।